খুলনা জেলার কয়রা উপজেলায় তনুশ্রী (১৮) নামে এক কলেজছাত্রীর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। গত ১৫ সেপ্টেম্বর বিকালে স্থানীয় পুলিশ তার লাশ উদ্ধার করে। ঘটনাস্থলে একটি চিরকুট পাওয়া যায়, যাতে আত্মহত্যার জন্য তিন ব্যক্তিকে দায়ী করা হয়েছে।
তনুশ্রী উপজেলার মহেশ্বরীপুর ইউনিয়নের হড্ডা গ্রামের দিপক মাঝির মেয়ে ছিলেন। তিনি গড়ইখালী আবু মুছা মেমোরিয়াল ডিগ্রি কলেজের প্রথম বর্ষের ছাত্রী ছিলেন। তার পরিবারের সদস্যদের দাবি, তনুশ্রী আত্মহত্যা করেছেন এবং আত্মহত্যার আগে তিন ব্যক্তিকে দায়ী করে একটি নোট লিখে গেছেন।
তনুশ্রীর বাবা দিপক মাঝি জানান, গত বৃহস্পতিবার দুপুরে খাবার খেয়ে তনুশ্রী নদীর চরের গাছ থেকে কেওড়া পাড়তে যান। বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে তিনি জানতে পারেন যে তার মেয়ে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন। দ্রুত বাড়ি ফিরে তিনি দেখেন মেয়ের ঘরের দরজা বন্ধ। এরপর জানালা ভেঙে ঘরে ঢুকে তনুশ্রীর পা উঁচু করে ধরেন এবং তার মা রশি কেটে দেন। তাকে নামিয়ে খাটের ওপর রাখার সময় তারা মোবাইল ফোন দিয়ে চাপা দেওয়া একটি কাগজ দেখতে পান।
নোটে লেখা ছিল, ‘আমি সঠিকভাবে বাঁচতে চাইছিলাম, কিন্তু পারলাম না। ওরা আমার পিছনে খুব ভালোমতো লাগিছে। আমি না মরা পর্যন্ত শান্তি পাবে না। শুভ, আলিফ, মিহির ওরা আমাকে বাঁচতে দিলো না।’
মহেশ্বরীপুর ইউনিয়নের মেম্বার চায়না মন্ডল বলেন, ‘বৃহস্পতিবার বিকালে খবর পেয়েই তনুশ্রীদের বাড়ি গিয়েছিলাম। সেখানে গিয়ে দেখি সে ঘরে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে। পুলিশ সেখান থেকে একটি সুইসাইড নোট উদ্ধার করে নিয়ে গেছে।’
আমাদী পুলিশ ফাঁড়ির কর্মকর্তা মো. মনিরুজ্জামান জানান, ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের কাছে লাশ হস্তান্তর করা হয়েছে। ঘটনাস্থল থেকে পাওয়া নোটটি তনুশ্রীর হাতের লেখা কিনা তা যাচাই করে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে। আত্মহত্যার পেছনে কারো প্ররোচনা থাকলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
কয়রা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এবিএমএস দোহা বলেন, ‘তনুশ্রীর লাশ উদ্ধারের ঘটনাটি সতর্কতার সঙ্গে তদন্ত করা হচ্ছে। তদন্ত শেষে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’