মাগুরায় ধর্ষণ ও হত্যাচেষ্টার শিকার শিশুটির মায়ের সঙ্গে ফোনালাপ করে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান শিশুটির চিকিৎসাসহ সব ধরনের সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন। শিশুটির মা জানান, তারেক রহমানের সঙ্গে ফোনে কথা হয়েছে এবং তিনি তাদের পাশে থেকে সব ধরনের সহযোগিতা করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
শিশুটির মা বলেন, "তারেক রহমান আমাদের সব দায়দায়িত্ব নিয়েছেন। তিনি আমাদের পাশে থেকে সব ধরনের সহযোগিতা করার আশ্বাস দিয়েছেন এবং সহযোগিতা করছেন। তারেক রহমান ও দেশবাসীর কাছে আমি দোয়া চাচ্ছি।"
তিনি আরও বলেন, "আমার মেয়েটা এখন লাইফ সাপোর্টে আছে। তার অবস্থা ভালো না। এতটুকু বাচ্চাকে কীভাবে যে অত্যাচার করেছে, হয়তো আপনারা শুনেছেন কিন্তু দেখতে তো পারেননি। তার শরীরে ব্লেড দিয়েও কতগুলো আঘাত করেছে।"
নির্যাতনের বিবরণ
শিশুটির মা অভিযোগ করেন, "বড় মেয়ের স্বামী, শ্বশুর ও ভাসুর—তিনজন মিলেই আমার ছোট মেয়ের ওপর নির্যাতন করেছে। মেয়ের জামাই আগেও বিয়ে করেছিল, আমরা বিষয়টি জানতাম না। মেয়ের শ্বশুরের বিরুদ্ধে আগেও আরও দুটি মেয়েলি কেস রয়েছে। সেখান থেকে খালাস নাকি পেয়েছে। এই কেস থেকে যেন কোনোভাবে খালাস না পায়। এর সর্বোচ্চ শাস্তি যেন হয়।"
তিনি আরও বলেন, "যারা আমার মেয়েকে জঘন্যভাবে নির্যাতন করেছে, তাদের শাস্তি দিয়ে দিক। আমার কথা, তাদের একেবারে ফাঁসি দিয়ে দিক। যাতে আর কোনো মা-বোনের দিকে এমন চোখ তুলতে না পারে।"
শিশুটির অবস্থা ও চিকিৎসা
শিশুটির অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তার চিকিৎসার জন্য চার সদস্যের একটি মেডিকেল বোর্ড গঠন করা হয়েছে। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান গণমাধ্যমকে জানান, শিশুটির অবস্থা খুবই সঙ্কটাপন্ন। তাকে লাইফ সাপোর্টে রেখে সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, "শিশুটির গলার আঘাতটি বেশি গুরুতর। এছাড়া যৌনাঙ্গে ক্ষত রয়েছে।"
ঘটনার পটভূমি
শিশুটির পরিবার সূত্রে জানা গেছে, কয়েক দিন আগে মাগুরায় বোনের বাড়িতে বেড়াতে গিয়েছিল শিশুটি। বৃহস্পতিবার (৬ মার্চ) রাতে বোনের বাড়িতে পাশবিক নির্যাতনের শিকার হয় সে। অচেতন অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে প্রথমে মাগুরা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে ফরিদপুর মেডিকেলে নেওয়া হয়। অবস্থা গুরুতর হওয়ায় রাতেই তাকে ঢাকা মেডিকেলে পাঠানো হয় এবং পেডিয়াট্রিক আইসিইউতে রাখা হয়।
অভিযুক্তদের গ্রেফতার
এই ঘটনায় শিশুটির বোনের শ্বশুর হিটু শেখকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এরপর দুলাভাই সজীব শেখকেও আটক করা হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, শিশুটির গলায় দাগ ও ধর্ষণের আলামত পাওয়া গেছে। বাকি অভিযুক্তদের ধরতে কঠোর অবস্থানে রয়েছে তারা।
এই ঘটনায় সমাজের বিভিন্ন স্তরে ব্যাপক ক্ষোভ ও প্রতিবাদের সৃষ্টি হয়েছে। শিশুটির দ্রুত সুস্থতা এবং ন্যায়বিচার নিশ্চিত করার দাবি জানিয়েছে সাধারণ মানুষ।