ঠাকুরগাঁওয়ে শিক্ষক কর্তৃক শিশু শিক্ষার্থী ধর্ষণের মর্মান্তিক ঘটনা

0

 ঠাকুরগাঁওয়ে শিক্ষক কর্তৃক শিশু শিক্ষার্থী ধর্ষণের মর্মান্তিক ঘটনা


ঠাকুরগাঁওয়ে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির এক শিশু শিক্ষার্থীকে ধর্ষণের অভিযোগে ওই বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মোজাম্মেল হক মানিককে আটক করা হয়েছে। শনিবার (৮ মার্চ) জেলা সদরের আউলিয়াপুর ইউনিয়নের একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে। বর্তমানে ভুক্তভোগী শিশুটি ঠাকুরগাঁও জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে।


ঘটনার বিবরণ

ভুক্তভোগীর পরিবারের অভিযোগ, স্কুল বন্ধ থাকলেও ওই বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মোজাম্মেল হক মানিক শিশুদের প্রাইভেট পড়ান। প্রতিদিনের মতো প্রাইভেট পড়তে যায় ভুক্তভোগী শিশুটি। এ সময় শিক্ষক সুযোগ নিয়ে তাকে একটি কক্ষে নিয়ে পাশবিক নির্যাতন চালানোর পর ধর্ষণ করে।


ঘটনার পর শিশুটির চিৎকার শুনে স্থানীয় লোকজন এগিয়ে আসেন। তবে শিক্ষকের লোকজন তাকে উদ্ধার করে জেলা শহরের সেবা হাসপাতাল অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে নিয়ে যায়। সেখানে গোপনে চিকিৎসা দেওয়ার চেষ্টা করা হয়। পরে সংবাদমাধ্যমের নজরে এলে শিশুটিকে দ্রুত ঠাকুরগাঁও জেনারেল হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়।


প্রশাসন ও পুলিশের তৎপরতা

ঘটনার খবর পেয়ে ঠাকুরগাঁও জেলা প্রশাসক ইশরাত ফারজানা দ্রুত হাসপাতালে ছুটে যান। তিনি ঘটনা পর্যালোচনা করে ভুক্তভোগী শিশু ও তার পরিবারকে সহায়তা করার পাশাপাশি দোষী ব্যক্তিকে আইনের আওতায় আনার নির্দেশ দেন।


ঠাকুরগাঁও ২৫০ শয্যার জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) রকিবুল আলম বলেন, "ধর্ষণের অভিযোগে একটি শিশু হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। আমরা প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়েছি এবং এ ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে ডাক্তারি পরীক্ষা-নিরীক্ষা চলছে। ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে।"


অভিযুক্ত আটক

ভুল্লি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইফুল ইসলাম বলেন, অভিযুক্ত শিক্ষক মোজাম্মেল হক মানিককে আটক করা হয়েছে। পরিবারকে এজাহার দেওয়ার জন্য উৎসাহিত করা হয়েছে এবং আইনি প্রক্রিয়া চলছে।


সমাজে প্রতিক্রিয়া

এই ঘটনায় স্থানীয় সমাজে তীব্র ক্ষোভ ও প্রতিবাদের সৃষ্টি হয়েছে। শিশু নির্যাতনের এমন নৃশংস ঘটনায় অনেকেই দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন। শিক্ষক সমাজের এমন ঘটনা শিশুদের নিরাপত্তা ও শিক্ষার পরিবেশ নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন তুলেছে।


শিশু সুরক্ষায় পদক্ষেপের দাবি

এই ঘটনা শিশু সুরক্ষা ও নিরাপত্তা নিয়ে সমাজে আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। শিশুদের নিরাপদ শিক্ষার পরিবেশ নিশ্চিত করতে শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়ায় কঠোর নজরদারি এবং শিশু সুরক্ষা নীতিমালা বাস্তবায়নের দাবি উঠেছে। এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে দ্রুত ও কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার প্রয়োজনীয়তা আবারও সামনে এসেছে।

Tags

Post a Comment

0Comments

Post a Comment (0)