চার বছরের শিশু ধর্ষণের মর্মান্তিক ঘটনা, অভিযুক্ত কিশোর আটক
শুক্রবার (৭ মার্চ) রাত সাড়ে আটটার দিকে ফরিদপুরে একটি মর্মান্তিক ঘটনা ঘটেছে। চার বছর বয়সী এক শিশুকে ধর্ষণের অভিযোগে ১৩ বছর বয়সী আব্দুল্লাহ নামের এক কিশোরকে আটক করা হয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে ফরিদপুর সদর উপজেলার একটি পেয়ারা বাগানে।
ঘটনার বিবরণ
শুক্রবার রাত সাড়ে আটটার দিকে আব্দুল্লাহ শিশুটিকে বাইসাইকেলে ঘোরানোর কথা বলে সাইকেলে উঠায়। এরপর তাকে নিয়ে যায় বাড়ির অদূরেই অবস্থিত একটি পেয়ারা বাগানে। সেখানে শিশুটিকে ধর্ষণ করে। এ সময় শিশুটির চিৎকার শুনে আশপাশের লোকজন ঘটনাস্থলে এগিয়ে আসে। তারা গুরুতর আহত অবস্থায় শিশুটিকে উদ্ধার করে এবং তাকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে।
অভিযুক্ত আব্দুল্লাহ পালানোর চেষ্টা করলে স্থানীয় জনতা তাকে আটক করে। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে এলে তাকে পুলিশের হাতে সোপর্দ করা হয়।
অভিযুক্তের পরিচয় ও পুলিশি ব্যবস্থা
শিশুটির বাবা জানান, বাজারে তার বড় ভাইয়ের সিঙাড়া-পুরির দোকান রয়েছে। সেখানে আব্দুল্লাহ নামের এই কিশোরটি কাজ করত। এ কারণে শিশুটির বাড়িতে তার যাতায়াত ছিল।
স্থানীয় ইউপি সদস্য জানান, রাতেই আব্দুল্লাহকে আটক করে স্থানীয় লোকজন। পরে পুলিশকে খবর দেওয়া হলে কোতোয়ালি থানা থেকে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে। স্থানীয়রা আব্দুল্লাহকে পুলিশের হাতে তুলে দেয়। তিনি এই ঘটনার দৃষ্টান্তমূলক বিচারের দাবি জানান।
ফরিদপুর কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. আসাদউজ্জামান বলেন, শনিবার (৮ মার্চ) শিশুটির বাবা কোতোয়ালি থানায় মামলা দায়ের করেছেন। অভিযুক্ত আব্দুল্লাহকে আটক করে পুলিশের হাতে সোপর্দ করা হয়েছে।
তিনি আরও জানান, "অপরাধীর বয়স ১৩ বছর হওয়ায় শিশু-কিশোর আইনে তাকে আদালতে পাঠানো হয়েছে। শিশুটি বর্তমানে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে (ওসিসি) চিকিৎসাধীন। শিশুটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিশু শ্রেণিতে পড়ালেখা করে। অভিযুক্ত আব্দুল্লাহ সদর উপজেলার কানাইপুর ইউনিয়নের হোগলাকান্দি গ্রামের হাসান বিশ্বাসের ছেলে।"
সমাজে প্রতিক্রিয়া
এই ঘটনায় স্থানীয় সমাজে তীব্র ক্ষোভ ও প্রতিবাদের সৃষ্টি হয়েছে। শিশু নির্যাতনের এমন নৃশংস ঘটনায় অনেকেই দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন। শিশু সুরক্ষা ও ন্যায়বিচার নিশ্চিত করার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি উঠেছে।
এই ঘটনা শিশু নির্যাতন ও নিরাপত্তা নিয়ে সমাজে নতুন করে প্রশ্ন তুলেছে এবং শিশু সুরক্ষা বিষয়ে সচেতনতা বৃদ্ধির প্রয়োজনীয়তা আরও একবার সামনে এনেছে।