মাগুরা, দৈনিক মাগুরা – মাগুরায় একটি শিশু ধর্ষণের মর্মান্তিক ঘটনায় ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে, যা শুক্রবার সদর থানায় হামলা এবং উত্তপ্ত বিক্ষোভে রূপ নেয়। ধর্ষণের শিকার আট বছরের এক শিশু, যে তৃতীয় শ্রেণিতে পড়ে, মাগুরা শহরের নিজনান্দুয়ালী এলাকায় তার বোনের বাড়িতে থাকাকালীন এই ঘটনার শিকার হয়। এই ঘটনায় জনরোষ ছড়িয়ে পড়ে এবং প্রতিবাদকারীরা দ্রুত বিচার ও ধর্ষকের মৃত্যুদণ্ডের দাবিতে রাস্তায় নেমে আসে।
জুমার নামাজের পর নোমানী ময়দান এবং ভায়নার মোড় থেকে দুটি পৃথক মিছিল বের হয়ে সদর থানায় জড়ো হয়। প্রতিবাদকারীরা আরবি অক্ষর খচিত ব্যানার নিয়ে ধর্ষকের ফাঁসির দাবিতে স্লোগান দিতে দিতে থানায় প্রবেশের চেষ্টা করে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে থানার প্রধান গেট বন্ধ করে দেওয়া হয়, তবে উত্তেজনা থামেনি। সেনা সদস্যদের ঘটনাস্থলে মোতায়েন করা হয় পরিস্থিতি শান্ত করতে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, স্থানীয় বিএনপি, ছাত্রদল এবং স্বেচ্ছাসেবক সংগঠনের নেতাকর্মীরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে মধ্যস্থতা করতে ঘটনাস্থলে পৌঁছান। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাথে যুক্ত শিক্ষার্থীরাও প্রতিবাদে যোগ দেয় এবং ধর্ষকের ফাঁসির দাবি জানায়। তবে থানায় হামলায় কারা জড়িত, তা এখনও স্পষ্ট নয়। সিসি ক্যামেরার ফুটেজ পর্যালোচনা করে দায়ী ব্যক্তিদের শনাক্ত করার চেষ্টা চলছে।
রাজনৈতিক অভিযোগ ও জনরোষ
জেলা জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক সংগঠনের সদস্য সচিব আবদুর রহিম অভিযোগ করেন, আওয়ামী লীগের সাথে যুক্ত একটি স্থানীয় গ্রুপ বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির উদ্দেশ্যে থানায় পরিকল্পিতভাবে হামলা চালিয়েছে। অন্যদিকে, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সদস্য রাতুল জানান, তারা শুধু ধর্ষণের শিকার শিশুটির ন্যায়বিচার চায় এবং থানায় হামলার সাথে তাদের কোনো সম্পর্ক নেই।
অপরাধের বিবরণ
শিকার শিশুটি শ্রীপুর উপজেলার সব্দালপুর ইউনিয়নের জারিয়া গ্রামের বাসিন্দা। স্কুল বন্ধ থাকায় সে তার বোনের বাড়িতে বেড়াতে গিয়েছিল। বৃহস্পতিবার সকালে শিশুটির বোন তাকে মেঝেতে পড়ে থাকতে দেখে এবং তার শরীরে আঘাতের চিহ্ন দেখতে পায়। শিশুটিকে মাগুরা ২৫০ শয্যা হাসপাতালে নেওয়া হয়, যেখানে ডাক্তাররা নৃশংস নির্যাতনের চিহ্ন নিশ্চিত করেন। তার অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল এবং পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করা হয়। শিশুটিকে আইসিইউতে রাখা হয়েছে এবং তার অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় চিকিৎসকরা শঙ্কা প্রকাশ করেছেন।
পুলিশের তদন্ত
মাগুরার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মিরাজুল ইসলাম জানান, পরিবারের পক্ষ থেকে এখনও কোনো আনুষ্ঠানিক মামলা করা হয়নি। তবে প্রাথমিক অভিযোগের ভিত্তিতে শিশুটির বোনের জামাই এবং শ্বশুরকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়েছে। থানায় হামলার পেছনে কারা এবং কী উদ্দেশ্য ছিল, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
এই ঘটনায় শিশু সুরক্ষা এবং যৌন সহিংসতা রোধে কঠোর আইনের প্রয়োজনীয়তা নিয়ে আলোচনা ছড়িয়ে পড়েছে। শিশুটি যখন জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে লড়াই করছে, তখনও সম্প্রদায়ের মানুষ ন্যায়বিচারের দাবিতে সোচ্চার, যা এমন নৃশংস অপরাধের বিরুদ্ধে জনরোষের প্রতিফলন।
Magura Erupts in Protest Over Child Rape Case; Police Station Attacked
Magura, Daily Magura – A horrific incident of child rape has sparked widespread outrage in Magura, leading to violent protests and an attack on the Sadar Police Station on Friday. The victim, an 8-year-old girl studying in the third grade, was allegedly raped while visiting her sister’s house in the Niznanduali area of Magura town. The incident has triggered public fury, with protesters demanding swift justice and capital punishment for the perpetrator.
The situation escalated after Jummah prayers when two separate protest marches, organized from Nomani Maidan and Vaynar Mor, converged at the Sadar Police Station. Protesters, carrying banners with Arabic inscriptions and chanting slogans demanding the rapist’s execution, attempted to storm the police station. Authorities closed the main gate to prevent the mob from entering, but tensions remained high. Army personnel were deployed to bring the situation under control.
Eyewitnesses reported that leaders and activists from the local BNP, Chhatra Dal, and volunteer organizations arrived at the scene to mediate. Students associated with anti-discrimination movements also joined the protests, echoing calls for the rapist’s execution. However, the identity of those involved in the police station attack remains unclear. Authorities are reviewing CCTV footage to identify the culprits.
Political Allegations and Public Outcry
Abdur Rahim, Secretary of the District Nationalist Volunteer Organization, accused a local group with alleged ties to the Awami League of orchestrating the attack on the police station to create chaos. Meanwhile, Ratul, a member of the Anti-Discrimination Student Movement, emphasized that while they demand justice for the victim, they have no involvement in the attack on the police station.
Details of the Crime
The victim, a resident of Jaria village in Shripur Upazila, was staying at her sister’s house during school holidays. On Thursday morning, her sister discovered her lying on the floor with visible injuries. The child was rushed to Magura 250-bed Hospital, where doctors confirmed signs of brutal assault. Due to her critical condition, she was referred to Faridpur Medical College Hospital and later to Dhaka Medical College Hospital, where she remains in the ICU. Doctors have expressed concern over her deteriorating health.
Police Investigation
Additional Superintendent of Police Mirazul Islam stated that no formal case has been filed by the victim’s family. However, based on preliminary complaints, the victim’s brother-in-law and father-in-law have been detained for questioning. Authorities are investigating the motives behind the attack on the police station.
The incident has reignited debates over child safety and the urgency of stricter laws to combat sexual violence. As the victim fights for her life, the community continues to demand justice, reflecting the growing public anger over such heinous crimes.
